December 23, 2024, 12:10 pm

বসুন্ধরার গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে বর্নাঢ্য সম্বর্ধনা দিল কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Thursday, February 24, 2022,
  • 60 Time View
বসুন্ধরার গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে বর্নাঢ্য সম্বর্ধনা দিল কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা বাংলাদেশের বিশিষ্ট ক্রীড়াপ্রেমী শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ফুটবল ক্লাবের কর্ণধার জনাব সায়েম সোবহান আনভীর’কে আজ বৃহস্পতিবার ভারতের জনপ্রিয় ক্লাব ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব’ সংবর্ধিত করলো। সাথে সম্মানিক আজীবন সদস্য পদ প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে জনাব সায়েম সোবহান এর সাথে উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী মিসেস সাবরিনা সোবহান।

‘আলো আমার আলো ওগো আলো ভুবন ভরা.. গানটি বাজছে।

ফুলেল আয়োজনে গান এবং নৃত্য পরিবেশনের সাথে বরণ করে নেওয়া হয় দেশের স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরার গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে।
এরপর ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররা আসন গ্রহণ করে।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফথেকে সস্ত্রীক এমডি’র হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্লাবের লাল-হলুদ জার্সি, উত্তরীয়, বিশেষ উপহার হিসেবে ক্লাবের গোল্ড কয়েন, ফলের বাস্কেট, কলকাতার নানা স্বাদের মিষ্টি, বাংলার পাঞ্জাবী ও শাড়ী।

এ সম্মান যেমন আন্তরিক ভাবে গ্রহণ করেছেন জনাব সায়েম সোবহান আনভীর, তেমন আপ্লুত তাঁকে সম্মানিত করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

সম্মননা পেয়ে আনভীর জানান, আপনাদের আন্তরিকতা আমাকে শুধু মুগ্ধ করেনি, আমাকে ভালোবাসা দিয়ে কিনে নিয়েছেন। আমিও আপনাদেরকে বাংলাদেশে আমন্ত্রন জানাচ্ছি। এখানে অনেকবার শুনেছি এপার বাংলা-ওপার বাংলা। আসলে বাংলাতো একটাই, ভাষাতো এক, মানুষগুলো তো এক, শুধু মাঝখানে একটা লাইন এসে গেছে। তা বলে খেলা বন্ধ থাকবে? আসেন বাংলাকে খেলাধুলার মাধ্যমে এক করি। আমি চাই শেখ রাসের ক্রীড়াচক্রের সাথে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের খেলা হোক। আমি আশা করবো এই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন ক্লাবের কর্মকর্তারা এবং এর পুরো স্পনসর করবে বসুন্ধরা।

এরপর শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের সাথে কলকাতাবাসীর পরিচিতি নিয়ে বলেন, শেখ রাসেল হলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা সন্তান। আমাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা। উনি আমাকে এই ক্লাবের দায়িত্ব দিয়েছেন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বসুন্ধরা কিংসের সাথে ইস্টবেঙ্গলের সহযোগিতার জন্য আমাকে যা বলবেন সব করে দেবো। আপনাদের আন্তরিকতা আমাকে কিনে নিয়েছেন। জনাব সোবানের কথা ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের হাতাতালির বন্যা বয়ে যায়।

ক্লাব কর্মকর্তা নীতু সরকার বলেন৷ ওনার শব্দ চয়ণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। ভানতের ফুটবল ক্যালেন্ডারের সাথে সিডিউল ম্যাচ করলে নিশ্চই বাংলাদেশে গিয়ে খেলব। এর সাথে তিনি বলেন, আগামীদিনে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র এবং ইস্টবেঙ্গলের কি সমন্বয় ঘটে তা পরবর্তীতে জানতে পারবেন। এখনই সবকিছু বলবো না।

সস্ত্রীক এমডিসহ এদিন উপস্থিত ছিলেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সচিব কল্যাণ মজুমদার, ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট শান্তিরঞ্জন দাসগুপ্ত, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসানসহ বিশিষ্টজনরা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিটি মিডিয়ার উচ্চপদস্থ দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

তবে কেনো ভারতের ইতিহাসে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব গুরুত্বপূর্ণ, ১৯২০ সালের ১লা আগস্ট অধুনা পুর্ববঙ্গের আবেগের স্ফুলিঙ্গ থেকে জন্ম নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। সুরেশ চন্দ্রচৌধুরী, শৈলেস বসু ও নসা সেন -এই তিন পুর্বপুরষের হাত ধরে শুরু হয়েছিল খেলার মাঠে পুর্ববঙ্গের অস্তিত্ব ও মর্য়াদা প্রতিষ্ঠার লড়াই। দল প্রথম মাঠে নামে ১১ই অগাস্ট হারকিউলিস কাপে। তখন পুর্ববঙ্গের বহু বিত্তবার মানুষ রয়েছে শহর কলকাতায়। পুর্ববঙ্গের আবেগীয় স্রোতে ভেসে যেতে এগিয়ে এলেন তাঁরাও।

তার ঠিক একবছর পর ইস্টবেঙ্গল ক্লাব মোহনবাগানের সাথে ভাগাভাগি করে চলে আসে ময়দানে। যা বর্তমান ভারতীয় সেনাবাহিনি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এরপর ভারতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদন পাওয়া এবং কলকাতা ফুটবল লিগের প্রস্তুতি। জন্ম নেয় ঘটি-বাঙালের লড়াই। ১৯২৫ সালে ইস্টবেঙ্গল সুযোগ পায় প্রথম ডিভিশনে খেলার। সুযোগ পেয়েই হারায় মোহনবাগান দলকে।

মাঠের বাইরে বাঙালিদের হেয় করার জবাব প্রথমবার ফুটবলের মাধ্যমে দিল ইস্টবেঙ্গল। ঘটিদের কৌলিন্যে সেটাই ছিল প্রথম এক সজোরে আঘাত। এরপর মাঠের বাইরে ফুটবল রাজনীতিতে জর্জরিত হয়ে ইস্টবেঙ্গলকে নেমে যেত হলো প্রথম ডিভিশন থেকে। সভ্য -সমর্থকরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাতে জ্বলন্ত মশাল নিয়ে। সেই প্রতিবাদের মশালই পরে হয়ে ওঠে ক্লাবের প্রতীক হিসেবে।

১৯৩১ সালে আবার ক্লাব উঠে আসে প্রথম ডিভিশনে। এরপর ভারতের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশে প্রভাব বিস্তার করে ইস্টবেঙ্গল। চীনের অলিম্পিক দলকে হারানোর পর ইউরোপ সফরে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। পরপর জেতা এবং ড্র, খালি পায়ে ইস্টবেঙ্গলে লড়াই দেখে গোটা ইউরোপ বিস্মিত হয়ে যায়।

এরপর ৭০ দশকে শুরু হয় ইস্টবেঙ্গলের সোনালী যুগ। তখন অপরদিকে বাংলাদেশে খানসেনাদের অত্যাচারে শরনার্থী আসতে শুরু করেছেন কলকাতায়। হাজারো কষ্টে, ব্যথা বেদনায় সেসময় শরনার্থীদের একমাত্র বিনোদন ছিল এই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। সমর্থকদের দেশ ছাড়ার ক্ষোভ প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে এই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। দর্পে-গর্বে-প্রতিবাদে, ইতহাসের পাতায় পাকাপাকি জায়গা করে নেয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। শতাব্দী প্রাচীন সেই ক্লাবে বিরামহীন আজও পথচলা।

প্রতিবাদের আগুন থেকে তৈরী ক্লাব এর সমর্থকরা আজও মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন,‘মাছের রাজা ইলিশ আর খেলাতে ফুটবল, সেই খেলাতে সেরা দল আমার-তোমার-সবার ইস্টবেঙ্গল। ’ সেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এই প্রথম বাংলাদেশের বসুন্ধরা গ্রুপের ক্রীড়াপ্রেমী জনাব সায়েম সোবহান আনভীরকে সম্মান জানালো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71